উত্থানের সঙ্গে পতনও দেখেছে বাংলাদেশ
দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই আসলে শুরু হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। সময়ের স্রোতে ১৯৯৭ সাল থেকে যেটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ নামে পরিচিত। বেড়ে গেছে দেশের সংখ্যাও। শুরু হয়েছিল সাফের চার দেশ নিয়ে। সর্বশেষ নাম লিখিয়েছে আফগানিস্তান। মানে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপার জন্য এখন লড়ে আট দেশ। আজ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের অষ্টম আসর শুরু হচ্ছে নেপালের রাজধানী শৈলশহর কাঠমান্ডুতে। কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে আজ উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি বাংলাদেশ ও স্বাগতিক নেপাল।
এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য এটাই ‘বিশ্বকাপ’। প্রতি দু’বছর অন্তর যেটি হয়ে থাকে (ক্যালেন্ডারে অনিবার্য কারণে বারকয়েক বছরের ব্যবধান কমবেশি আছে)। যাতে পরিসংখ্যান তো বটেই, সব হিসেবেই ভারত ফেভারিট। তবে এটি ঠিক, এ মুহূর্তে সেরা দলগুলোর মধ্যে পার্থক্য উনিশ-বিশ। কোনো দলই কাঠমান্ডুতে এসে গলা হাঁকিয়ে বলতে পারছে না ‘আমরাই ফেভারিট’। ভারতের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রি যেমন বলেছেন ‘প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল’।
টুর্নামেন্টের ইতিহাস জানতে একটু পিছিয়ে যাওয়া যাক। ১৯৯৩ সাল। সেবারই সাফের দেশগুলোর ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের আসর প্রথমবারের মতো বসেছিল পাকিস্তানে। তবে অংশ নিয়েছিল চার দেশ। পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল। খেলেনি বাংলাদেশ। সিঙ্গেল লিগে পয়েন্টে শিরোপা জিতেছিল ভারত। এরপর ১৯৯৫। ভেন্যু কলম্বো। অংশ নেয় পাঁচ দেশ। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো। সেমিফাইনালে বাংলাদেশ টাইব্রেকারে হারে ভারতের কাছে। তবে ভারতকে ফাইনালে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।
১৯৯৭ সালে নেপালে ফরম্যাট বদলে শুরু হয় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। অংশ নেয় ছয় দেশ। বাংলাদেশের ফল ভয়াবহ। গ্রুপ পর্বেই বিদায়। মালদ্বীপের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র আর ভারতের কাছে ৩-০ গোলে হার। কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ফাইনালে মালদ্বীপকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত। জো পল আনচেরি, বাইচুং ভুটিয়া আর আইএম বিজয়নের ভারতের সামনে পাত্তাই পায়নি মালদ্বীপ।
১৯৯৯ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসে ভারতের গোয়াতে। দেশ ছয়টিই। গ্রুপ পর্বে ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে হারায় ৪-০ গোলে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ উঠে আসে সেমিফাইনালে। সেমিফাইনালে বাংলাদেশ ২-১ গোলে হারায় নেপালকে। কিন্তু ফাইনালে ভারতের কাছেই হেরে যায় ২-০ গোলে। গোল করেন ব্রুনো কুটিনহো এবং বাইচুং ভুটিয়া।
২০০৩ সালে প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানসহ অংশ নেয় আট দেশ। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ টানা তিন ম্যাচে হারায় নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটানকে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ সেমিফাইনালে সাফ পাওয়ার হাউস ভারতকে হারায় ২-১ গোলে। গোল করেন কাঞ্চন ও মতিউর মুন্না। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বাংলাদেশ টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে মালদ্বীপকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়। নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ গোলে ড্র ছিল। এখন পর্যন্ত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে একবারই শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে।
২০০৫ সালের আয়োজক পাকিস্তান। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে স্বাগতিক পাকিস্তানকে ১-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো পৌঁছায় ফাইনালে। কিন্তু ফাইনালে ভারতের কাছে ২-০ গোলে হেরে রানার্স আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে। ২০০৮ সালে টুর্নামেন্টের যৌথ আয়োজক ছিল মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ বিদায় নেয় গ্রুপ পর্ব থেকেই। ড্র করে ভুটান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে। ১-০ গোলে হারে অন্যতম স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার কাছে। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় মালদ্বীপ। ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারায় তারা।
২০০৯ সালে ফের টুর্নামেন্ট ফিরে আসে বাংলাদেশে। আট দলের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নাম লেখায় সেমিফাইনালে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ স্বাগতিক দর্শক-সমর্থকদের হূদয় ভেঙে ১-০ গোলে হেরে যায় ভারতের কাছে। অপর সেমিতে মালদ্বীপ ৫-১ গোলে উড়িয়ে দেয় শ্রীলঙ্কাকে। ভারত-মালদ্বীপ ফাইনাল নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের পরও গোলশূন্য থাকে। অতএব টাইব্রেকার। তাতে মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফের চ্যাম্পিয়ন ভারত।
সর্বশেষ ২০১১ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজক ছিল ভারত। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওই আসরে বাংলাদেশ চরম ব্যর্থ। গ্রুপ পর্বে চার দলের মধ্যে চতুর্থ হয়ে বিদায় নেয়। ফাইনালে ভারত ৪-০ গোলে আফগানিস্তানকে ধসিয়ে দিয়ে আরও একবার সাফ শ্রেষ্ঠত্ব তুলে নেয়।
সব মিলিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সাত আসরে সেরা দল ভারত। তারা শিরোপা জিতেছে পাঁচবার। একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ। এছাড়া বাংলাদেশ দু’বারের রানার্স আপ। একবার তৃতীয়, একবার সেমিফাইনালিস্ট। তবে সবশেষ আসরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স একেবারেই তলানিতে। এবার কাঠমান্ডুতে ব্যর্থতার উল্টোপিঠে থাকা সাফল্য কী দেখবে বাংলাদেশ? ডাচ কোচ লোডউইক ডি ক্রুইফের পরীক্ষা তো সেটাই।
বৃষ্টিতে ড্র ঢাকা টেস্ট
- সিরিজের একটা নিষ্পত্তির জন্য মুখিয়ে ছিল দুই দল। কিন্তু বৃষ্টির বাধায় ধুয়ে মুছে গেল ঢাকা টেস্টের ...
‘বিশ্বকাপে নেইমারই ব্রাজিলের বাজি’
- চলতি বছর ঘরের মাঠে ফিফা কনফেডারেশন কাপ নেইমারের জন্য একটা বড় পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষায় ‘জিপিএ ...
‘ড্রাগসের সঙ্গে আপস নয়’
- স্প্রিন্ট জগতে যখন নামি-দামি তারকাদের ডোপপাপের খবর বেরোয় তখন চমকে উঠতে হয় বৈকি! এই তো সেদিন ...
প্রথম ওয়ানডেতে সালমাদের হার
- দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল স্বাগতিকদের কাছে প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে হেরে গেছে। বেনোনির ...
মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ মানেই ম্যাজিক
- ব্যাপারটা শচীন বনাম লারার লড়াইয়ের মতোই দাঁড়িয়ে গেছে। কে সেরা-লারা নাকি শচীন। এ প্রশ্নে রায় এখনও ...
