ডলফিন ফ্লাই এবং ঘুম বিসর্জন
কোন জাতি সবচেয়ে বেশি অলস? এমন প্রশ্নে নানা বিতর্ক হতে পারে৷ সামনে আসতে পারে বিভিন্ন উদাহরণ কিংবা বিশ্লেষণ৷ তবে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের মধ্যে আলস্য যে একটি বৈশিষ্ট্য সেটি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি প্রায় দেড় মাসের এ টু্যরে৷ বার্বাডোজের মানুষের আলস্য মনে হয় সবচেয়ে বেশিই৷ অবশ্য গর্ডন গ্রিনিজকে যদি উদাহরণ হিসেবে সামনে আনা হয় তাহলে হিসাবটা ভুলই হবে৷ তিনি অবশ্যই ব্যতিক্রম৷ তার গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে বাংলাদেশ দলের অনেক খেলোয়াড়ের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছিল৷ ১৯৯৮-এর কমনওয়েলথ গেমসে ক্রিকেট ছিল৷ সেবার বাংলাদেশের গ্র”পেই ছিল বার্বাডোজ৷ জোয়েল গার্নার বার্বাডোজ দল নিয়ে কুয়ালালামপুর গিয়েছিলেন৷ খুব কাছ থেকে তাদের দেখার সুযোগ হয়েছিল৷ তাকে কিংবা তার দলের কোনো ক্রিকেটারের ভেতরও কোনো আলস্য দেখা যায়নি৷ কিন’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ কাভার করতে একদিনের জন্য বার্বাডোজে পা দিয়েই তাদের আলস্যে হাঁফিয়ে উঠেছিলাম৷ কেমন তাদের আলস্যের নমুনা?
ধর”ন, আপনি কারো সামনে হাজির হয়েছেন কোনো দরকারি কাজে৷ তিনি কোনো কাজ করছেন৷ খুব তাড়াহুড়ো করে বললেন, আমাকে কি একটু সাহায্য করতে পারেন? আপনি যতোই উত্তেজিত হোন না কেন, তিনি মাথা তুলবেন না৷ বেশি তাড়াহুড়ো করলে বলবেন, অপেক্ষা কর”ন৷ কতোক্ষণ? সেটা তার মর্জির ওপরই নির্ভরশীল৷ আরো যদি তাড়া থাকে আপনার, তাহলে মুখের ওপরই বলে দেবেন বিদায় হতে৷ কাজেই দ্র”ত কোনো কাজের তাগিদ নিয়ে যেন ঘুণাক্ষরেও বার্বাডোজের কারো কাছে যাবেন না৷
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে মূলত আমাদের মিশন শুর” হওয়ার কথা জ্যামাইকা থেকে৷ মন্টিগো বে’তে উদ্বোধন এ প্রতিযোগিতার৷ কিন’ বার্বাডোজেই যেহেতু বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মুখোমুখি হওয়া গেছে, কাজেই অপেক্ষা করে কে৷ কিন’ খিদায় পেট চোঁ-চোঁ করছে৷ ট্যাক্সিচালককে বলা হলো, এমন এক স্থানে নিয়ে চলো যেখানে পেট ভরে খাওয়া যাবে৷ ট্যাক্সি ছুটলো৷
সমুদ্রের পার ঘেঁষেই এক সড়ক৷ ওস্টিন৷ মাছের প্রাচীনতম আড়ত৷ পর্যটকরা এখান থেকে মাছ কিনে হোটেলে নিজের হাতে রান্না করেন৷ ওস্টিনের রাসত্মার দু’পাশে খাবারের দোকান৷ মাথার ওপর শামিয়ানা, চারদিকে খোলা স্থানে টেবিল পাতা৷ উচ্চৈঃস্বরে মিউজিক বাজছে৷ বিভিন্ন ছোট ছোট খাবারের দোকান৷ রান্নার আয়োজন দোকানের বাইরে, রাসত্মায়৷ ডলফিন মাছ ভাজা হচ্ছে৷ বন্ধু উত্পল শুভ্রই খাবারের অর্ডার দিলো৷ তবে এ ডলফিন মাছ সেই ডলফিন নয়, যার সঙ্গে খেলাধুলা চলে৷ বার্বাডোজের সামুদ্রিক এক প্রকার মাছ, যার নামটাই ডলফিন৷ সুস্বাদু৷ টানা দু’দিনের বিমান ভ্রমণের ক্লানত্মি এড়াতে এমন খোলামেলা পরিবেশে খাওয়ার বিকল্প নেই৷
৯ মার্চ সকাল ৯টা ২৫-এ ফ্লাইট জ্যামাইকার কিংস্টনের উদ্দেশে৷ প্রিন্ট মিডিয়ার তিন সাংবাদিক রাতের ঘুমও বিসর্জন দিলাম৷ বিদেশে অ্যাসাইনমেন্ট করতে গিয়ে এমন বিসর্জনের ঘটনা কতদিন ঘটেছে এর কোনো হিসাব নেই৷ ল্যাপটপ খুলে বসে পড়লাম লিখতে৷ বার্বাডোজের ডেটলাইনে লেখার লোভ সংবরণ করতে পারে কে৷ সমস্যা ইন্টারনেট সংযোগ৷ অপেক্ষা করতে হবে সকাল ৮টা পর্যনত্ম৷
খুব সকালেই ঘুম ভেঙে গেলো৷ ফ্লাইট ধরতে দেরি হয়ে যায়_ এ আশঙ্কায় রাতে বড়ো লাগেজে কেউ হাত দেইনি৷ কিন’ ইন্টারনেটে আলাদা আলাদাভাবে লেখা পাঠাতে গেলে সময় লাগবে৷ তাই আমার দায়িত্ব নিলেন সাইদুজ্জামানই৷ তিনি তার মেইল থেকেই আমার লেখা পাঠিয়ে দিলেন ভোরের কাগজে৷ উত্পল শুভ্র যখন লেখা পাঠাতে গেলেন কম্পিউটারই বেঁকে বসলো৷ একদিকে প্লেন ধরার টেনশন,
অন্যদিকে কম্পিউটার বিড়ম্বনা৷ রিসিপশনে একাধিকবার সাহায্য চাইতে গিয়েই বার্বাডোজের আলস্য বড়ো হয়ে দেখা দিলো৷ ঠিক একইভাবে যখন ট্যাক্সি ডাকা হলো কিংবা বেলবয়কে বলা হলো র”ম থেকে লাগেজ নিয়ে আসতে, তখনো পরিস্থিতি এক৷ আমরা কাঁপছি টেনশনে৷ তারা নির”ত্তাপ৷ হেলেদুলে কাজ করছে৷ বেশি প্রশ্নে সরল উত্তর_ ধৈর্য ধরো৷ সকাল ৯টায় যখন পেঁৗছলাম বিমানবন্দরে, তখন ক্যারিবিয়ান এয়ারের কাউন্টার একেবারেই খালি৷ সবাই উঠে গেছেন প্লেনে৷ আমরা তাড়াহুড়ো করেই লাগেজ বুক করলাম৷ তারপর ইমিগ্রেশন৷ সেখানে হাতে পরিয়ে দেয়া হলো কাগজের ব্যান্ড৷ তাতে লেখা_ কারিকম৷ নির্দেশনা, যখনই এর কিছু অংশ লাল হবে, ফেলে দেবেন৷ তবে যে দেশে যাবেন, অবশ্যই সে দেশের ইমিগ্রেশন আর কাস্টমস পর্যনত্ম এটি হাতেই রাখতে হবে৷ বার্বাডোজের আকাশে ফের বিমানে৷ নিচে আটলান্টিকের হালকা নীল রংয়ের পানি৷ অ্যান্টিগা হয়েই এ ফ্লাইট যাবে জ্যামাইকায়৷ একদিনের ব্যবধানে নতুন আরেক দেশ, দ্বীপে যাওয়ার আনন্দ যতো না ছিল, এরচেয়ে বেশি ছিল ভয়৷ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ এলাকা জ্যামাইকা৷ প্রতিদিনই মানুষ খুন হয় যেখানে৷ ইন্টারনেটে জ্যামাইকা লিখে সার্চ দিন, ভালো খবর পেতে কষ্ট হবে খুব৷ এমন অচেনা দেশে বিশ্বকাপ কাভার করতে যেতে ভয় তো খানিকটা লাগবেই৷
নাইরোবির এক ট্যাক্সি ড্রাইভার
- ১৯৯৪ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবীতে আইসিসি ট্রফি কভার করতে গিয়ে পরিচয় হয়েছিল এক ট্যাকিস্স ড্রাইভারের সঙ্গে.......
বৃদ্ধ নিবাসেই তাঁরা স্বাধীন
- পরিবার পরিজন আছেন কাছাকাছি। আছে নিকটাত্মীয়ও। তবুও বৃদ্ধ নিবাসেই ঈদ করবেন ইয়াতুন্নেছা ও শাহানা বেগম। ইয়াতুন্নেছার ...
এত গোল ফুটবলে হয় না...
- ওল্ডরিখ সোয়ার সুইজারল্যান্ডের কোচ। ঢাকায় এসেছিলেন সাফ গেমসের জন্যে বাংলাদেশকে তৈরি করতে। বাংলাবাজার পত্রিকায় ১৯৯৩ সালের ...
Slow Death from Arsenic
- THE appalling scenario of the country has been reflected in a recent survey, which says that ...